ঢাকা ০৪:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মানব পাচার, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় জেল হাজতে বিএনপি নেতা

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৪:৫২:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫ ১৬ বার পড়া হয়েছে

মানব পাচার, অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপির এক স্থানীয় নেতাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার (৪ জুন) দুপুরে তাকে পঞ্চগড়ের বিজ্ঞ আমলী আদালত-২–এ হাজির করা হলে বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আসামি মো. জাকির হোসেন (৫০) দেবীগঞ্জ উপজেলার চর তিস্তা পাড়া খাটিয়াডাঙ্গা এলাকার ওবায়দুল হক কমরুর ছেলে। তিনি চিলাহাটি ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। একই মামলার অপর আসামি মো. সপিকুল ইসলাম (৫০) ভুজারীপাড়া এলাকার সাবুল ইসলামের ছেলে।

মামলার এজাহারে জানা যায়, মধ্যপ্রাচ্যে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ওই দুই আসামি চরতিস্তা পাড়া এলাকার তিনজন ভুক্তভোগী সামসুদ্দোহার ছেলে ফরহাদ হোসেন, জব্বার আলীর ছেলে ফরহাদ হোসেন এবং দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. তৌহিদ ইসলাম –এর কাছ থেকে প্রায় ১৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। পরবর্তীতে তাদের ভুয়া ভিসায় সৌদি আরবে পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগী তৌহিদ ইসলাম সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর সেখানে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ১১ দিন কারাভোগের পর তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। দেশে ফিরে তিনি জানান, ফরহাদ হোসেন ও তার বোন জামাই ফরহাদ হোসেন এখনও অবৈধভাবে সৌদি আরবে আত্মগোপনে রয়েছেন এবং মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

ঘটনা জানাজানি হলে, গত ২৪ এপ্রিল ভুক্তভোগীদের পরিবার অভিযুক্তদের কাছে টাকা ফেরত ও বিদেশে অবস্থানরত স্বজনদের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানায়। কিন্তু আসামিরা তাদের কোনো সহায়তা না করে উল্টো প্রাণনাশের হুমকি দেন।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার থেকে দলেনা বেগম বাদী হয়ে জাকির হোসেন ও সপিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ আমলী আদালত-২–এ একটি মামলা (মামলা নম্বর: ১৩৪/২০২৫) দায়ের করেন। মামলার পর আদালতের নির্দেশে আসামিদের জেল হাজতে পাঠানো হয়।

এ ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্রে জানা যায়, জাকির হোসেন দীর্ঘদিন নিজের ক্ষমতা ও প্রতিপত্ত বিস্তার করে আদম ব্যবসার পাশাপাশি এলাকার গরিব-অসহায়দের জমি দখলসহ একাধিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে এছাড়া শেখবাঁধা ফুলবাড়ী স্লুইসগেট থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে চিলাহাটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, “জাকির হোসেন ও সপিকুল ইসলাম ভুয়া ভিসার মাধ্যমে তিনজনকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছেন। তাদের মধ্যে তৌহিদ ইসলাম গ্রেফতার হয়ে দেশে ফিরেছেন। বাকি দুইজন এখনও অবৈধভাবে সেখানে অবস্থান করছেন এবং মানবেতর জীবন যাপন করছেন।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

মানব পাচার, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় জেল হাজতে বিএনপি নেতা

আপডেট সময় : ০৪:৫২:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

মানব পাচার, অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপির এক স্থানীয় নেতাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার (৪ জুন) দুপুরে তাকে পঞ্চগড়ের বিজ্ঞ আমলী আদালত-২–এ হাজির করা হলে বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আসামি মো. জাকির হোসেন (৫০) দেবীগঞ্জ উপজেলার চর তিস্তা পাড়া খাটিয়াডাঙ্গা এলাকার ওবায়দুল হক কমরুর ছেলে। তিনি চিলাহাটি ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। একই মামলার অপর আসামি মো. সপিকুল ইসলাম (৫০) ভুজারীপাড়া এলাকার সাবুল ইসলামের ছেলে।

মামলার এজাহারে জানা যায়, মধ্যপ্রাচ্যে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ওই দুই আসামি চরতিস্তা পাড়া এলাকার তিনজন ভুক্তভোগী সামসুদ্দোহার ছেলে ফরহাদ হোসেন, জব্বার আলীর ছেলে ফরহাদ হোসেন এবং দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. তৌহিদ ইসলাম –এর কাছ থেকে প্রায় ১৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। পরবর্তীতে তাদের ভুয়া ভিসায় সৌদি আরবে পাঠানো হয়।

ভুক্তভোগী তৌহিদ ইসলাম সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর সেখানে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ১১ দিন কারাভোগের পর তাকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। দেশে ফিরে তিনি জানান, ফরহাদ হোসেন ও তার বোন জামাই ফরহাদ হোসেন এখনও অবৈধভাবে সৌদি আরবে আত্মগোপনে রয়েছেন এবং মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

ঘটনা জানাজানি হলে, গত ২৪ এপ্রিল ভুক্তভোগীদের পরিবার অভিযুক্তদের কাছে টাকা ফেরত ও বিদেশে অবস্থানরত স্বজনদের দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানায়। কিন্তু আসামিরা তাদের কোনো সহায়তা না করে উল্টো প্রাণনাশের হুমকি দেন।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার থেকে দলেনা বেগম বাদী হয়ে জাকির হোসেন ও সপিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ আমলী আদালত-২–এ একটি মামলা (মামলা নম্বর: ১৩৪/২০২৫) দায়ের করেন। মামলার পর আদালতের নির্দেশে আসামিদের জেল হাজতে পাঠানো হয়।

এ ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্রে জানা যায়, জাকির হোসেন দীর্ঘদিন নিজের ক্ষমতা ও প্রতিপত্ত বিস্তার করে আদম ব্যবসার পাশাপাশি এলাকার গরিব-অসহায়দের জমি দখলসহ একাধিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে এছাড়া শেখবাঁধা ফুলবাড়ী স্লুইসগেট থেকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এ বিষয়ে চিলাহাটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ বলেন, “জাকির হোসেন ও সপিকুল ইসলাম ভুয়া ভিসার মাধ্যমে তিনজনকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছেন। তাদের মধ্যে তৌহিদ ইসলাম গ্রেফতার হয়ে দেশে ফিরেছেন। বাকি দুইজন এখনও অবৈধভাবে সেখানে অবস্থান করছেন এবং মানবেতর জীবন যাপন করছেন।”