ঢাকা ০৩:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যেতে হয়েছিল বিয়েতে, ফিরলেন না আর — বাঁশঝাড়ে মিলল যুবকের নিথর দেহ

আলিম আল রাজী বাপ্পি
  • আপডেট সময় : ১১:৩৯:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫ ১১ বার পড়া হয়েছে

যেতে হয়েছিল বিয়েতে, ফিরলেন না আর — বাঁশঝাড়ে মিলল যুবকের নিথর

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন মোকলেছার রহমান (৩২) নামের এক যুবক। বিয়ের দাওয়াতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার পরদিন সকালে বাড়ির পাশের বাঁশঝাড় থেকে তার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার দন্ডপাল ইউনিয়নের ধনমন্ডল ঢাকাইয়া পাড়া এলাকায়।

নিহত মোকলেছার স্থানীয় খোঁচাবাড়ি বাজারে কসমেটিকসের দোকান চালাতেন। তিনি ওই গ্রামের মো. শাহাবুদ্দিনের একমাত্র ছেলে।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ৯টার দিকে ছাগল বাঁধতে গিয়ে বাঁশঝাড়ে মরদেহটি পড়ে থাকতে দেখেন নিহতের চাচি মোকসেদা বেগম। পরে তার চিৎকারে এলাকাবাসী জড়ো হন এবং পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

খবর পেয়ে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআইয়ের পৃথক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলামত সংগ্রহ করে। এছাড়া সেনাবাহিনীর একটি দলও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তদন্তের স্বার্থে দুপুর দেড়টার দিকে পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়।

‘বন্ধুদের মাধ্যমেই আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে’

নিহতের বাবা মো. শাহাবুদ্দিন বলেন,
“বুধবার রাতে আমার ছেলে বিয়ের দাওয়াতে গিয়েছিল। এরপর আর ফিরে আসেনি। সকালে শুনি বাঁশঝাড়ে তার লাশ পড়ে আছে। আমি মনে করি, তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ওর দোকান ভালো চলত, কারো সঙ্গে শত্রুতা ছিল না। হিংসা থেকেই হয়তো খুন করা হয়েছে।”

স্ত্রীর চোখে পানি, গলায় প্রশ্ন– ‘কেনো ফিরলো না সে?’

মোকলেছারের স্ত্রী জানান,
“বিকেলে দোকানে যাওয়ার পর রাত ৮টায় আমি তাকে ফোন করে বাসার কিছু বাজার আনতে বলি। সে বলে, আনে দিবো। কিন্তু রাত ১১টা পর্যন্ত বাসায় না ফেরায় আমি আবার ফোন করি, তখন মোবাইল বন্ধ পাই। ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সকালে চাচি চিৎকার দিলে দৌড়ে গিয়ে দেখি – স্বামী পড়ে আছে রক্তে ভেসে।”

প্রাথমিক তদন্তে হত্যার আলামত, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ

দেবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রবীর কুমার সরকার বলেন,
“ঘটনার পরপরই আমরা সিআইডি ও পিবিআইয়ের সহায়তায় ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করেছি। প্রাথমিকভাবে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলেই মনে হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছে।”

এ ঘটনায় এলাকায় শোক ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা দ্রুত খুনিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

যেতে হয়েছিল বিয়েতে, ফিরলেন না আর — বাঁশঝাড়ে মিলল যুবকের নিথর দেহ

আপডেট সময় : ১১:৩৯:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫

যেতে হয়েছিল বিয়েতে, ফিরলেন না আর — বাঁশঝাড়ে মিলল যুবকের নিথর

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন মোকলেছার রহমান (৩২) নামের এক যুবক। বিয়ের দাওয়াতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার পরদিন সকালে বাড়ির পাশের বাঁশঝাড় থেকে তার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার দন্ডপাল ইউনিয়নের ধনমন্ডল ঢাকাইয়া পাড়া এলাকায়।

নিহত মোকলেছার স্থানীয় খোঁচাবাড়ি বাজারে কসমেটিকসের দোকান চালাতেন। তিনি ওই গ্রামের মো. শাহাবুদ্দিনের একমাত্র ছেলে।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ৯টার দিকে ছাগল বাঁধতে গিয়ে বাঁশঝাড়ে মরদেহটি পড়ে থাকতে দেখেন নিহতের চাচি মোকসেদা বেগম। পরে তার চিৎকারে এলাকাবাসী জড়ো হন এবং পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

খবর পেয়ে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশ, সিআইডি ও পিবিআইয়ের পৃথক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে আলামত সংগ্রহ করে। এছাড়া সেনাবাহিনীর একটি দলও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তদন্তের স্বার্থে দুপুর দেড়টার দিকে পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়।

‘বন্ধুদের মাধ্যমেই আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে’

নিহতের বাবা মো. শাহাবুদ্দিন বলেন,
“বুধবার রাতে আমার ছেলে বিয়ের দাওয়াতে গিয়েছিল। এরপর আর ফিরে আসেনি। সকালে শুনি বাঁশঝাড়ে তার লাশ পড়ে আছে। আমি মনে করি, তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ওর দোকান ভালো চলত, কারো সঙ্গে শত্রুতা ছিল না। হিংসা থেকেই হয়তো খুন করা হয়েছে।”

স্ত্রীর চোখে পানি, গলায় প্রশ্ন– ‘কেনো ফিরলো না সে?’

মোকলেছারের স্ত্রী জানান,
“বিকেলে দোকানে যাওয়ার পর রাত ৮টায় আমি তাকে ফোন করে বাসার কিছু বাজার আনতে বলি। সে বলে, আনে দিবো। কিন্তু রাত ১১টা পর্যন্ত বাসায় না ফেরায় আমি আবার ফোন করি, তখন মোবাইল বন্ধ পাই। ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সকালে চাচি চিৎকার দিলে দৌড়ে গিয়ে দেখি – স্বামী পড়ে আছে রক্তে ভেসে।”

প্রাথমিক তদন্তে হত্যার আলামত, চলছে জিজ্ঞাসাবাদ

দেবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রবীর কুমার সরকার বলেন,
“ঘটনার পরপরই আমরা সিআইডি ও পিবিআইয়ের সহায়তায় ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করেছি। প্রাথমিকভাবে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলেই মনে হচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে এবং কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছে।”

এ ঘটনায় এলাকায় শোক ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা দ্রুত খুনিদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।